১.
বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর থেকেই একাডেমিক পড়ার পাশাপাশি আউট বইও পড়ার আগ্রহ জন্মায় আমার। আউট বই বলতে কোন কবিতা বা উপন্যাসের বই নয়। নয় কোন থ্রিলার বা গল্পসল্প। ফিকশনাল বলতে আসলে যেটুকু বুঝায় তার কোনটাই আমার এতটা ছুঁয়ে দেখা হয় নি! যদিও পরবর্তীতে একটু আধটু চেষ্টা করেছি, কিন্তু সেটুকুই বা আর কতদিন যায়। অনেকটা ঘোলে স্বাদ মেটানোর মত।
২০১৭ এর মাঝামাঝি কোন এক গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরে সূর্যত্তাপ মাথায় নিয়ে নীলক্ষেতের মাঝ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। অনেকের জানা থাকার কথা, “সকাল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত এখানকার দোকানগুলোর সামনে রাস্তার মধ্যে খোলা পাটাতনে বইয়ের স্তুপ নিয়ে বিভিন্ন বিক্রেতারা বসে থাকেন। অনেকটা ‘নিত্য বইয়ের হাঁট’ বলা যায় নীলক্ষেতকে। আশেপাশের জ্ঞানপিপাসুদের জ্ঞান তৃষ্ণা মেটায় এই পুরাতন বইয়ের স্তুপগুলো। এখান দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় আপনার চোখের সামনে দেখা দিতে পারে এমন কোন এক গুরুত্বপূর্ণ পুরোনো বই, যেটা সাধারণ কোন দোকানে খোঁজ করে পাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে।
সুখাদ্য আর সুখপাঠ্য বলতে যা বুঝায় এমন খাবার কিংবা সাহিত্য দু’টোই খুঁজে বের করা দুষ্কর। পুরাতন কোন বইয়ের দোকান কিংবা গ্রাম্য কোন চাষীর কাছেই দুটো পাওয়া যাইতে পারে। তাই ভালো বা টেকসই জিনিস কেনার দরকার হলে পুরাতন সাদামাটা দোকানে গিয়েই হাজিরা দেওয়াই শ্রেয় বলে মনে করি। এমনিভাবে সেদিন নীলক্ষেত দিয়ে যাওয়ার সময় কিনে নিয়েছিলাম পুরাতন একখানা বই ‘মক্কার পথ’। যার লেখক মুহাম্মদ আাসাদ। বইটির ইংরেজি নাম,’The Road to Mecca’ অনুবাদ করেছেন কথা সাহিত্যের গুনীজন শাহেদে আলী স্যার। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। তারপরই মুহাম্মদ আসাদের সাথে আমার যাত্রা শুরু হয়। সেই যে পরিচয়, তা এখন অব্দি তার গতি চলমান রয়েছে। আসাদ ছিলেন ইসলামের হয়ে পশ্চিমের প্রতিনিধি।
২.
১৯০০ সালে ইউরোপের বুকে জন্ম নেওয়া এক ইহুদি তরুণ নাম লিওপোল্ড উইস। পারিবারিক ভাবে ইহুদি রাব্বী হিসেবে কয়েক পুরুষ দায়িত্ব পালন করে আসলেও তার বাবার সময় সেই সিলসিলার ব্যঘাত ঘটে। তার পিতা ব্যারিস্টারি অধ্যয়ন করে হয়ে ওঠেন নামকরা আইনজীবী এবং বিয়ে করেন এক ব্যাংকার পরিবারে। পড়াশোনার ঐতিহ্যিক রেওয়াজ অনুযায়ী লিওপোল্ড ১৩ বছর বয়সেই হিব্রু ভাষা ও ইহুদি ধর্ম সম্পর্কে ব্যপক জ্ঞান লাভ করেন। এই বয়সই তিনি ইহুদি ধর্মগ্রন্থগুলো পড়তে ও লিখতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। এরামাইক ভাষায়ও প্রচন্ড দক্ষ হয়ে ওঠেন। যা পরবর্তীতে আরবি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হিসেবে কাজ করে। কিন্তু, প্রচন্ড মেধাবী উইস নিজেকে একটা সময় ধর্মের প্রতি বীতশ্রদ্ধ দেখতে পান। এবং নিজেকে স্বাধীনচেতা ভাবতে শুরু করেন। ফলে, এখানেই তার ধর্মচর্চা বন্ধ হয়ে যায়। তিনি এক নতুনত্বের সন্ধানে ঘুরে বেড়াতে থাকেন। তিনি চারপাশ হাতড়িয়ে হৃদয়ের ব্যথা উপশমকারী ওষুধের খোঁজে লেগে গিয়েছিলেন।
উইসের চোখে ইউরোপের তৎকালীন ধর্মীয় বাড়াবাড়ি, গোঁড়ামি ও ভন্ডামী ব্যপকভাবে আঘাত করে। হাজারো প্রশ্ন মনের ভিতর উঁকি দেওয়ার চেষ্টা করে। শুধু উইসই নয় সময়কালীন যুবকদের ধর্ম নিয়ে উন্মাদনা মহামারির আকার ধারণ করে। অনেকে প্রশান্তির লাভের জন্য কমিউনিজমের ভিতর শান্তি খুঁজে ফেরেন। উইসও তার থেকে ব্যতিক্রম ছিলেন না। কিন্তু, কমিউনিজম ও তাকে সন্তুষ্ট করতে পারে নি। বিশেষ করে, তৎকালীন ভিয়েনার ক্যাফেগুলো।এডলার, স্টিকেল ও অটোগ্রোসদের মত পণ্ডিতদের উত্তেজনাপূর্ন বাকবিতন্ডায় মত্ত থাকতো।
কিন্তু, উইস তাতেও বিচলিত হয়েছেন। তার মতে, “এ বিজ্ঞান মানুষের আত্মার সকল রহস্যকে কতগুলে স্নায়ুবিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় পর্যবসিত করতে চায়।” বাবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও এক ভিন্ন জীবনের স্বপ্ন ধ্যানে বেরিয়ে পড়েন উইস। যতদিন না মামা ডোরিয়ানের অনুরোধে জেরুজালেমের প্রতি পাড়ি জমিয়েছেন তার পূর্ব সময় পর্যন্ত উইসের জীবন ছিল একটা সংগ্রাম মুখোর জীবন। জীবনের কঠিন সময় পার করার পরও উইস ভেঙে পড়েন নি। স্বপ্ন তাকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছুটিয়ে বেড়িয়েছে। জেরুজালেমে আসার পর জার্মানের মর্যাদাকর পত্রিকা Frankfurter Zeitung এর স্থানীয় প্রতিনিধি নিযুক্ত হন। ঘুরে বেড়াতে থাকেন আরবের মরুভূমির মধ্যে। আর খুঁজতে থাকেন আরবের ধর্ম ইসলামের মূল ভাবকে। ইসলামের কোন জিনিস আরবীয় মানব মনকে একতার বন্ধনে এমন আবদ্ধ করেছে তা পরখ করার জন্য সহযোগী জাহিদকে নিয়ে উটের পিঠে করে আরবের বুকে ধেয়ে বেড়ান উইস। যতদূর এগিয়ে গিয়েছেন ততটুকু মুগ্ধতায় জড়িয়ে পড়েছেন।
উইসের লেখায় আরবদের সম্পর্কে সবসময়ই একধরনের নস্টালজিয়া কাজ করে বলে মনে হয়। কখনো কখনো আরবদের সম্পর্কে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠেন কেননা, “their lives flow with the naivete of animals-তাদের জীবন প্রাণীর আদিমতার মতই প্রবাহমান।” ইস্তাম্বুলে এসেও তিনি আরবদের ভুলতে পারেন নাই। তার কন্ঠে বেদনার ভঙ্গি ঝরে পড়ে। তিনি আনমনেই যেন বলে ওঠেন, ‘Oh, my Arab people’- ও আমার আরব ভাইয়েরা।
লেখকের মন ও মস্তিষ্কে আরবরা কতটুকু জায়গা করে নিয়েছিল কিংবা তাদের কালচারাল ইম্প্যাক্ট সম্পর্কে লিখতে গিয়ে আসাদ লিখেছেন, “During several months, I was so impressed by the uniqueness of the Arabs that I am now looking everywhere for the strong centre of their lives….. recognizing the eternally, exciting, the stream of vitality, in such a great mass, in so strange a Nation.”[১]
জেরুজালেমেই থাকাকালীন উইস জীবনের নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন। সম্মুখে আসেন ইসলাম ধর্ম পালনকারী এক মুসলিম জনগোষ্ঠীর। তাদের কাজকারবার কথা-বার্তা, চলাফেরা, ইবাদত সকল কিছু উইস পরখ করে দেখার প্রয়াস চালান। যা উইসের মধ্যে আলাদা একটা চেতনার ভাবাবেগ তৈরি করে। তিনি যেন নতুন এক দিশার মুখোমুখি হয়েছেন। ফিলিস্তিনে থাকতে গিয়ে তিনি নিজধর্ম ইহুদি ও মুসলমানদের ভালো করে তুলনা করার সুযোগ পান। বেলফোর ঘোষণা অনুযায়ী জেরুজালেমে তখন ইহুদি বসতি স্থাপন শুরু হয়ে গিয়েছিল। উইস যেটাকে মেনে নিতে পারেন নি। জায়নাবাদের বিরোধিতা নিজের মধ্যে লুকিয়ে না রেখে বরং পত্রিকায়ও তার বিরোধীতা অব্যাহত রেখেছিলেন।ফলে তার করা রিপোর্ট তার নিজের জন্য ভালো কোন ফল বয়ে আনেনি।
যদিও সেটা ছিল সাময়িক। কেননা উইসের লেখার জনপ্রিয়তা তৎকালীন সময়ে বেড়েই চলছিল। কিন্তু, তৎকালীন সময় উইসের মধ্যে আরবের জনজীবন ও সংস্কৃতি একটা প্রভাবীয় রেখা টেনে দিয়েছিল। যা তার মধ্যে অভাবনীয় আলোড়ন সৃষ্টি করে। ফলে তিনি মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পড়া শুরু করেন। এছাড়াও, ইসলাম ধর্ম নিয়ে শুরু করেন গভীর পড়াশোনা। তার এই চিন্তা দর্শন চর্চা চালিয়ে যান দীর্ঘ সময়। তারপরই একদিন উইস স্বপ্রণোদনায় ইসলামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে স্ত্রী এলসাকে সাথে নিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ফেলেন। নতুন নাম হয় মুহাম্মদ আসাদ। শুরু করেন নতুন জীবন। ইসলামের মূলমন্ত্রে আকৃষ্ট হয়ে চলে আসেন মক্কা ভূমিতে। এখানেই কাটিয়ে দেন জীবনের ৬ টি বৎসর।
৩.
আরব ভূমিতে ব্যপক পদচারণার ফলে আসাদের সমগ্র সত্তা আরবীয় সংস্কৃতিকে আত্মস্থ করে ফেলে। যাকে তিনি নিজের ভাষায় এভাবে প্রকাশ করেছেন, “After all, it was a matter of love and love is composed of many things, of our desires and our loneliness, of our high aims and our short comings, of our strength and our weakness. So it was in my case. Islam came over me like a robber who enters a house by night ; but unlike a robber, it entered to remain for good.[২]
মক্কায় থেকে শুরু করেন কোরআন, হাদিস ও ইসলামের ইতিহাস অধয়ন। তার সাথে ইসলামি দর্শন ও চিন্তাধারা নিয়েও পড়াশোনা চালিয়ে যান। দীর্ঘ ৬ বৎসর এই অধয়্যয়নে কাটিয়ে দেন আসাদ। ফলে, একটা সময় যে ইসলামের সৌন্দর্যে তাকে ধর্মান্তকরণে আকৃষ্ট করেছিল তার সাথে বাস্তবতার অমিলগুলোও সম্মুখে ধরা পড়া শুরু করলো। তার দৃষ্টিতে ইসলাম আগের অবস্থানেই আছেন কিন্তু মুসলমানরা আগের মত ঐ অবস্থানে নেই। তাদের হৃদয়গুলো ইসলামের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠছে না।
তিনি লিখেন, The firm conviction that Islam, as a spiritual and social phenomenon, is still, in spite of all drawbacks caused by the deficiencies of the Muslims, by far the greatest driving force mankind has ever experienced.[৩]
আসাদ আরো বেশি জানার লক্ষ্য এক সময় পাড়ি জমান ভারতীয় উপমহাদেশে। দেখা করেন আল্লামা ইকবালের সাথে। তার অনুরোধই থেকে যান এখানে। তার সাহিত্য কর্মের বিশাল ময়দান তৈরি হয় এখানেই। এখানেই লিখেন তার প্রথম গ্রন্থ ‘Islam and the Crossroads’। যেটি প্রকাশিত হয় ১৯৪১ সালে। এই বইতে আসাদ বিভ্রান্ত ও দিশেহারা মুসলিম উম্মাহর প্রতি তীব্র হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন। পাশাপাশি, ইসলামের অপরিসীম বলিষ্ঠতার ঘোষণা দেন। শুধু তাই নয়, তার সাথে পাশ্চাত্যের আধুনিকতা ও বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতার দার্শনিক আলাপ তুলে ধরেন। এবং মুসলমানদেরকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য নতুন করে ইসলামের মেনিফেস্টো ঘোষণা করেন। আসাদ ভারতবর্ষে থাকাবস্থায় আরো কিছু গ্রন্থ লিখেন। বিশেষত, ১৯৪৮ সালের পাকিস্তান সংবিধানের রূপকল্প নির্মাণের লক্ষ্যে আসাদ রচনা করেন The principle of State and Government in Islam. আধুনিক যুগের ইসলামি রাষ্ট্র কাঠামোর পথ ও পদ্ধতি উল্লেখ করার চেষ্টা করেছেন।
তিনি প্রস্তাব করেন যে, “ইসলামী রাষ্ট্রের হাতে শরীয়ার এমন একটি সংকলন থাকবে যা মাযহাব নিরপেক্ষভাবে রাষ্ট্রের মুসলিম নাগরিকদের কাছে সাধারণভাবে গ্রহণযোগ্য হবে এবং ঐশী আইনের শাশ্বত ও অপরিবর্তনীয় চরিত্রকে এমন ভাবে ব্যক্ত করবে, যাতে করে মানুষের সামাজিক ও মানসিক বিকাশের সকল পর্যায়ে এর প্রযোজ্যতা প্রমাণিত হয়।”[৪]
যে বইয়ের জন্য আসাদ সারাবিশ্বে ব্যপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন, তা হলো ‘The Road to Mecca’। যেটি ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত হয়। বইটি সম্পর্কে মনিষী কাজী দীন মুহম্মদ বলেন, ‘The Road to Mecca’ বইখানি বস্তুত মুহাম্মদ আসাদের রুহানি আত্মজীবনী। এ গ্রন্থে তার ভ্রমণ জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা, আরব বিশ্বের মানুষ ও তাদের জীবন ধারা এবং তার সাথে প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের জীবন ধারার তুলনামূলক বৈশিষ্ট্য তার আত্মিক ও আধাত্মিক দিগন্ত উন্মোচনের কাহিনি তার স্বভাব সুলভ অনবদ্য কাব্য ভাষায় তুলে ধরেছেন। গ্রন্থখানি এক অতৃপ্ত সত্য সন্ধানী চিত্তের উপলব্ধ সত্যের মর্মস্পর্শী করুন কান্নার বিশ্বস্ত ইতিহাস। দ্বাদশ অধ্যয়ে সমাপ্ত এই গ্রন্থে লেখক এক অনির্বচনীয় বাচনভঙ্গিতে তুলে ধরেছেন ব্যক্তিবেদনাবিদ্ধ অধ্যাত্ম তৃপ্তির দীর্ঘশ্বাস।”
এছাড়াও, আসাদের অন্যতম অনবদ্য অবদান হলো The Message Of The Quran। ১৯৮০ সালে এটি প্রকাশিত হয়। গ্রন্থখানি আসাদের সারা জীবনের সাধনার পরিপক্ব ফল। ইংরেজি ভাষায় পিকথল, ইউসুফ আলী ও মুহম্মদ আলীর করা ভাষ্যের সাথে মিলিয়ে পড়লেই বুঝবেন এর মূল্য কি?!
৪.
বাংলাদেশে আসাদ পরিচিত হয়ে ওঠেন ষাটের দশকে। এরপরই আস্তে আস্তে অনুবাদ হয়ে এক এক করে সামনে আসতে থাকে। তবে আসাদকে পরিচিত করে তোলার পিছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি তিনি হলেন শাহেদ আলী স্যার। তার ‘রোড টু মক্কার’ জাদুকরী অনুবাদ আসাদকে পাঠকসমাজে ব্যপক জনপ্রিয় করে তোলে। এছাড়াও তিনি আসাদের রাষ্ট্রনীতি সংবলিত বই ‘The principle of state and government in Islam’বইয়ের অনুবাদও করেন। আসাদের ‘ইসলাম এট দ্য ক্রসরোড’ বইয়ের অনুবাদ করেন সৈয়দ আব্দুল মান্নান। যা পড়লেই নিজের ভিতর আলাদা একটি শক্তি কাজ করে। সাহসের সঞ্চার হয় বলা যায়।
আসাদ জন্মগ্রহণ করেন ১৯০০ সালে পোল্যান্ডের লিমবার্গ শহরে। ইসলামের জন্য নিজেকে শতধা ব্যস্ত রাখা এই বুদ্ধিজীবী মরক্কোর তানজিয়ার্স শহরেও দীর্ঘদিন ছিলেন। তারপর ১৯৯২ সালে ইন্তেকাল করেন। গ্রানাডায় তার মরদেহ সমাহিত করা হয়। আসাদের মনতুঞ্জে নাকি মক্কায় নিজেকে শায়িত করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু তার সেই বাসনা পূরণ করা হয় নি! এছাড়াও যে সৌদি তাকে ভালোবাসার চাদরে আগলে রেখেছিল। সেই ডারাও তাকে একটা সময় দূরে সরিয়ে দিয়েছিল। তারপরও আসাদ দমে যান নি। নিজেকে একজন লড়াকু ভেবে একাই লড়ে গেছেন।
২০০০ সালে মুহাম্মদ আসাদের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রাবন্ধিক, গ্রন্থকার ও বিশেষজ্ঞ মনোচিকিৎসক ফাহমিদ-উর-রহমান বাংলাদেশের জ্ঞানীগুনীদের পক্ষ থেকে অভিবাদন স্বরুপ একখানা সম্পাদিত বই প্রকাশ করেন। তখন এটি বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনে ব্যপক সাড়া ফেলেছিল। দীর্ঘ সময় পর বইটি আবার পুনঃপ্রকাশিত হলো। পূর্বজনদের সাথে নতুন করে লেখক কাতারে আরো অনেকেই যুক্ত হয়েছেন। মা শা আল্লাহ। লেখকদের জন্য রইলো দেয়া। আল্লাহ সবাইকে ভালো রাখুন। আমীন।
সূত্র:
[১] ফাহমিদ-উর-রহমান, উত্তর আধুনিক মুসলিম মন ১ম খণ্ড,পৃষ্ঠা-৮৪, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, ঢাকা।
[২] Muhammad Asad, The Road to Mecca.
[৩] Muhammad Asad, The Road to Mecca
[৪] শাহেদ আলী অনূদিত বাংলা পুনঃসংস্করণ : ২০২০ : ১১৮। মুহাম্মদ আসাদ ; বাংলাদেশের অভিবাদন (সম্পাদিত) পৃষ্ঠা-১০১।