আপনি সারাজীবন খুব ভালো ভাবে ইবাদত করে কাটালেন। মৃত্যুর পরে বিচার দিবসে যখন আপনার আমলনামা আপনার হাতে দিবে, তখন দেখলেন আপনার আমলনামায় কোন আমল জমা হয়নি। তখন আপনার চাইতে কপাল পোড়া আর কেউ থাকবে?
হ্যাঁ, এমনটাই হবে, যদি নিয়ম না জেনে ফরজ গোসল করেন। কারণ ফরজ গোসল সঠিক পদ্ধতিতে না করলে সারাজীবনই নাপাক অবস্থায় কাটাবেন। বিশেষ করে আমার সমবয়সী বন্ধু সকল তোমরা লজ্জায় কোনো আলেম বা যারা জানেন তাদের কাছে কোনদিনই জানতে যাওনি। না জেনে যদি এভাবেই তোমার জীবনঘড়ি থেমে যায় কেমন হবে সেই সময়টা একটু চিন্তা করে দেখ। একটু লজ্জায় সারাজীবনের ইবাদত বরবাদ।
যে সব কারণে গোসল ফরজ হয়:
১. স্বপ্নদোষ বা উত্তেজনাবশত বীর্যপাত হলে।
২. সহবাসে (সহবাসে বীর্যপাত হোক আর নাই হোক)।
৩. মেয়েদের হায়েয-নিফাস শেষ হলে।
৪. নাপাক অবস্থায় ইসলাম গ্রহণ করলে।
গোসলের ফরজ তিনটি:
১. গড়গড়াসহ কুলি করা।
২. নাকের নরম অংশ পর্যন্ত পানি পৌঁছানো।
৩. সমস্ত শরীর ধৌত করা।
ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম:
১. গোসলের নিয়ত করা, ‘বিসমিল্লাহ’ বলে গোসল শুরু করা। দুই হাত কবজি পর্যন্ত ধোয়া। (বুখারী ২৪৮)
২. পানি ঢেলে বাম হাত দিয়ে লজ্জাস্থান পরিষ্কার করা। (বুখারী ২৫৭)
৩. বাম হাতটি ভালভাবে ঘষে ধুয়ে নেওয়া (বুখারী ২৬৬)।
৪. নামাজের ওজুর মতো ভালভাবে পূর্ণরূপে ওজু করা। এক্ষেত্রে শুধু পা দুটো বাকি রাখলেও চলবে, যা গোসলের শেষে ধুয়ে ফেলতে হবে। (বুখারী ২৫৭, ২৫৯, ২৬৫)।
৫. মাথায় পানি ঢেলে চুলের গোড়া ভালভাবে আঙ্গুল দিয়ে ভিজানো। (বুখারী ২৫৮)।
৬. পুরো শরীরে পানি ঢালা; প্রথমে ডানে ৩ বার, পরে বামে ৩ বার, শেষে মাথার উপর ৩ বার। (বুখারী ১৬৮)
(যেন শরীরের কোন অংশ বা কোন লোমও শুকনো না থাকে।পুরুষের দাড়ি ও মাথার চুল এবং মহিলাদের চুল ভালোভাবে ভিজতে হবে। নাভি, বগল ও অন্যান্য কুঁচকানো জায়গায় অবশ্যই পানি ঢালতে হবে)।
৭. গোসলের জায়গা থেকে একটু সরে গিয়ে দুই পা ধোওয়া। (বুখারী ২৫৭)
এটাই হচ্ছে গোসলের পরিপূর্ণ পদ্ধতি। উল্লেখ্য, এইভাবে গোসল করলে এর পরে নামায পড়তে চাইলে আলাদা করে ওযু করতে হবে না, যদি না গোসল করার সময় ওযু ভংগের কোনো কারণ ঘটে থাকে। গোসলের পরে কাপড় চেঞ্জ করলে বা হাঁটুর উপরে কাপড় উঠে গেলে ওযু ভাঙ্গবে না, এটা ওযু ভঙ্গের কারণ না। আল্লাহ আমাদের সঠিকভাবে ফরয গোসল করার ও এ জ্ঞান সকলের কাছে পৌছে দেয়ার তওফিক দান করুন। আমিন।